নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে সেই নদীতে ফেলে রাখা খালিদ বিন লিসাদ হত্যার বেরিয়ে এলো আসল রহস্য। সেই হত্যার ক্লু বের হয়ে আসলো অভিযুক্ত দুই জনকে গ্রেফতার করে।
বুধবার(২০ নভেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) আশরাফুল ইসলাম। এরআগে গতকাল তাদের দুজনকে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানাধীন কাটাসুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর এলাকার চান্দের হাট বাজারের তাড়াঠেনা এলাকার রুস্তম আলীর ছেলে মো. ওয়াহিদ (৪০) ও তার স্ত্রী নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের মুশরুত পানিয়াল পুকুর এলাকার আব্দুল হাইয়ের মেয়ে মিনারা খাতুন মিনু বেগম(৩০)।
জানা গেছে, মুশা পাকা মাথা সফি মিয়া পাড়ার ওই ২২ বছরের ছাত্রকে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
গত মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের চাড়াল কাটা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত লিসাদ মুশা পাকার মাথা সফি মিয়াপাড়া এলাকার মবেদুল হকের ছেলে ও কিশোরগঞ্জ কারিগরি বিএম কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে বলে জানা যায়। সে পড়লেখার পাশাপাশি একটি ক্যাবল অপারেটরের( ডিস) কোম্পানিতে কাজ করছিলেন।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, লিসাদের সাথে মিনারা কারিগরি বিএম কলেজে একই সাথে পড়তেন। সেসময়ে তাদের দুজনের মধ্যে পরিচয় হয়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে লিসাদ মিনারার বাড়িতে যাতায়াত করতেন। এসময়ে তাদের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। এতে লিশাদ মিনারাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে মিনারার আগের স্বামী থাকায় মিনারা তাকে বিয়ে করতে রাজি হয়নি। পরে লিসাদ মিনারাকে জোড় করে রংপুরে গিয়ে আদালতের মাধ্যমে তারা দুজনে বিয়ে করেন। বিয়ের পরে মিনারার আগের স্বামীকে তালাক দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এতে মিনারা শারীরিক ও মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন।
লিসাদ গত ০৯ নভেম্বর শনিবার ওয়াজ মাহফিল শুনতে যাওয়ার কথা বলে নিজের বাড়ি থেকে বেড়িয়ে মিনারার বাড়িতে যায়৷ মিনারা বাড়ির পাশের বাজারের দোকান থেকে ঘুমের ঔষধ কিনে এনে লিসাদকে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ায়। লিসাদ দুধ খাওয়ার কিছুক্ষণ পরে অচেতন হয়ে গেলে তাকে ঘরের মেঝেতে পুতে রাখেন। পরেরদিন সকালে সে আবার মাটি সরিয়ে দেখেন সে মারা গেছেন। পরে মিনারা তার বাবাকে সিমেন্ট বালু এনে তাকে পুতে রাখা স্থান ঢালাই দিতে বললে মিনারার বাবা কারন জানতে চায়। এতে মিনারা তার বাবাকে সব খুলে বললে তার বাবা গভীর রাতে বাড়িতে থাকা বস্তায় ভরে মিনারার চাচাতো ভাইয়ের সহায়তায় বাড়ির পাশের নদীতে লিসাদের মরদেহ ফেলে দেয়। পরে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের সাইফুল এলাকার চাড়াল কাটা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ
এবিষয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, লিসাদের মরদেহ উদ্ধারের পরে আমরা মিনারার ভাইকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে তিনদিনের রিমান্ডে নিয়েছি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
এবিষয়ে র্যাব মিনারা ও তার স্বামীকে গ্রেফতার করেছে। মিনারার সাথে তার পরোকিয়ার কারনে তাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে। এখনো মিনারাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে শেষ হলে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
প্রতিবেদনঃ লাতিফুল আজম কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী।