আবারও বাড়ছে ডেঙ্গু। চার দিনে দু-হাজারের বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে হাসপাতালে। ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া যাচ্ছে কক্সবাজার, বরগুনা ও যশোরে। কীটতত্ত্ববিদের আশঙ্কা, চলতি মাসেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আগামী মাসে আরও বাড়তে পারে ডেঙ্গু সংক্রমণ।
সরেজমিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ডেঙ্গু ওয়ার্ডে দুই সপ্তাহে রোগী বেড়েছে তিনগুণ। এদের মধ্যে লালবাগ, কেরানীগঞ্জ ও কামরাঙ্গীরচরের রোগী বেশি। রাজধানীর প্রায় প্রতিটি হাসপাতালেই বেড়েছে ডেঙ্গু রোগী।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার রাশেদুল হাসান বলেন, ‘অনেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শকে চলে যাচ্ছেন, তবুও হাসপাতালে আসছেন না। দু-তিনদিনের জ্বর, শরীরে ব্যথা-মাথাব্যথা এসব উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা উচিত। সচেতনতার অভাবে ডেঙ্গুতে মৃত্যুও পর্যন্ত হতে পারে।’
পরিসংখ্যান বলছে, জুলাই মাসেও দিনে অন্তত ৮৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, এখন হচ্ছে ৪০০ জন। সেপ্টেম্বরের ১১ দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫ হাজারের বেশি মানুষ। মারা গেছে ১৯ জন।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেন, ‘যেভাবে এখন বৃষ্টি হচ্ছে এর কারণেও ডেঙ্গুর প্রভাব বাড়ছে। পুরো বাংলাদেশে যেহেতু ইনফেকশন ছড়িয়ে গেছে, সেক্ষেত্রে আমাদের ভেক্টর কন্ট্রোলের পদ্ধতিটাও কিছুটা ভিন্ন হবে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু বাড়ছে অথচ সিটি করপোরেশনের কোনো উদ্যোগ নেই। ঢাকার বাইরে পরিস্থিতি আরও খারাপ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘এডিস মশার ঘনত্ব সারা বাংলাদেশে প্রায় প্রতি জেলাতে বেশি পাচ্ছি। এডিসের ঘনত্ব, বৃষ্টিপাত, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা এবং ডেঙ্গু রোগী—এই কয়েকটি মিলে আমরা একটি ফোরকাস্টিং মডেল তৈরি করি সেই ফোরকাস্টিং মডেলে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে, সেপ্টেম্বর মাসজুড়েই ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকবে। এটিকে সেপ্টেম্বরে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে অক্টোবর মাসেও পরিস্থিতি খারাপ হবে।’
এ বছর হাসপাতালে ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছেন ১৭ হাজারের বেশি। মারা গেছে ১০২ জন।