নানা আয়োজন ও উৎসবমুখর পরিবেশে মুখরিত পঞ্চগড়ের তরুণ সমাজ। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মাসব্যাপী তারুণ্যের এই উৎসব ভিন্নধর্মী উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে। তরুণদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও উদ্দীপনা আয়োজনকে করেছে প্রাণবন্ত।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ১৮ ডিসেম্বর শুরু হওয়া এই উৎসবে ২৫টি ইভেন্ট আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলাধুলার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা হাজারো দর্শক উপভোগ করেছেন। এছাড়া, “কেমন চাই আগামীর বাংলাদেশ” শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে, যেখানে তরুণরা তাদের মতামত ও স্বপ্ন তুলে ধরেছে।
উৎসবের অংশ হিসেবে শহরের সৌন্দর্য্যবর্ধন কার্যক্রম, পাখির অভয়ারণ্য স্থাপন এবং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চলছে। ফুটবল ও ভলিবল টুর্নামেন্ট, কারাতে প্রতিযোগিতা, সাইকেল রেস, অবস্ট্যাকল রেস, এবং স্কেটিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে সহস্রাধিক শিশু-কিশোর ও তরুণ।
গত শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসবের উদ্বোধন করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদ রহিম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী। উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সচিব খোরশেদ আলম খান, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুনসী, ১৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মনিরুজ্জামান এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৯/বীর সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্টের মেজর মেহেদী হাসান।
আগামী ২১ জানুয়ারি বিতর্ক উৎসব, ২২ জানুয়ারি উপস্থিত বক্তৃতা এবং ২৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে তিন দিনব্যাপী পিঠা উৎসব, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা এবং গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে স্কিল ডেভেলপমেন্ট সামিট, ইংলিশ স্পিকিং, ফ্রিল্যান্সিং এবং কমিউনিকেশন বিষয়ক কর্মশালা আয়োজন করা হবে।
নতুন বাংলাদেশের ধারণা প্রচারে পেশাজীবীদের (রিকশাচালক, শ্রমিক, ড্রাইভার) জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিও থাকবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক মোকাদ্দেসুর রহমান সান বলেন, “উৎসবটি তরুণদের মধ্যে মাদক ও দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।” জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী বলেন, “মাসব্যাপী এই উৎসবের মূল লক্ষ্য তরুণদের নেতৃত্ব বিকাশ। তাদের উৎসব বাস্তবায়ন ও পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
উৎসবের সমাপ্তি হবে ২৫ জানুয়ারি বিখ্যাত ব্যান্ড শিল্পীদের কনসার্টের মাধ্যমে। এই আয়োজন তরুণ সমাজের জন্য অনুপ্রেরণার নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করছে।
পঞ্চগড়ের এই তারুণ্য উৎসব শুধু বিনোদন নয়, বরং তরুণদের মধ্যে নেতৃত্ব বিকাশ, মাদকবিরোধী মনোভাব এবং দক্ষতা উন্নয়নের একটি সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছে। মাসব্যাপী আয়োজন তরুণদের জন্য এক অনন্য প্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে। ২৫ জানুয়ারির সমাপ্তি কনসার্ট শুধু আয়োজনের শেষ নয়, বরং একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
প্রতিবেদনঃ স্নিগ্ধা খন্দকার,পঞ্চগড়।
