নীলফামারীর ডিমলায় কবরস্থান পরিষ্কার করতে গিয়ে প্রতিবেশীর মারধরের শিকার হয়েছেন একই পরিবারের ৩ জন।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ির ইউনিয়নের পশ্চিম খড়িবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে মারধরের শিকার তিন জন ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা ভর্তি করান স্থানীয়রা।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শহিদুল ইসলামের প্রতিবেশী কহিনুর বেগমের পরিবারের সঙ্গে চার শতক কবর স্থানের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। বিরোধকৃত চার শতক জমি শহিদুল ইসলামের পরিবার ক্রয় সূত্রে মালিক হওয়ায় তারা ভোগ দখল করে আসছিলেন। এরপরেও শাহাজানাজ বেগমের পরিবার পেশীশক্তি ও আওয়ামী লীগের দলীয় ক্ষমতার জেরে দখলের পায়তারা করতে থাকেন। এ কারণে দুই পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্য হতে থাকে। এরই জের ধরে শাহানাজের পরিবার শহিদুলের পরিবারের ক্ষতি করার চেষ্টা করে। এ অবস্থায় শহিদুলের মা, স্ত্রী ও ছোট ভাই কিছু লোকজনের মাধ্যমে ইট, বালু, সিমেন্ট নিয়ে ওই কবরস্থানের গাছাপালা পরিষ্কার করে পাকা করার জন্য গেলে শাহনাজ বেগমের পরিবারের লোকজন শহিদুলের পরিবারের লোকজনদের অকথ্য ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। গালিগালাজের প্রতিবাদ করার শহিদুলের পরিবারকে এলোপাতারি মারধর করতে থাকে তারা। পরে স্থানীয়রা ছুটে এসে আহতদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি বাজারে ছিলাম আমার ছোট ভাই, মা ও স্ত্রী তারা কবরস্থান পাকা করার জন্য পরিষ্কার করতে যায়। এসময় শাহানাজের পরিবারের লোকজন আমার পরিবারকে অর্তকিতভাবে হামলা করে। তারা বরাবরই আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপট দেখাত এবং শাহনাজের ভাই সেনাবাহীনিতে চাকরি করায় সেই হুমকি দেয় সবসময়। আমরা অসহায় বলে কখনো বিচার পাই না। আমরা এর একটা সুষ্ঠু বিচার চাই।
শহিদুলের মা হনুফা বেগম বলেন, আমার স্বামী মারা গেছে, মেয়ে মারা গেছে এই কবর স্থানে কবর দিতে দেয়নি। এই কবরস্থানে আমার শ্বশুর, শাশুড়ির কবর আছে। সেই কবরস্থান থেকে মেম্বার চেয়ারম্যান তাদের থেকে আমাদেরকে বের করে দিছে। তারা আমাদেরকে এইটা দখলে নিতে বলছে, ওরা আমাদেরকে দখলে আসতে দেয় না। কবরস্থানটি আমার ছেলেরা দখলে নিয়ে তাদের দাদা, দাদির কবরস্থান পাকা করে দিতে চেয়েছিল। এজন্য পরিষ্কারের কাজ করতেছিলাম। এসময় তারা গালিগালাজ করলে আমরা তার প্রতিবাদ করলে আমাদের ওপর হামলা করে। আমি বেশি কিছু বলতে পারতেছি না, আমার শরীর চলতেছে না।
শাহানাজ বেগমের ছেলে রওশন জামিল বিপ্লব বলেন, আমি এই মুহূর্তে এলাকার বাহিরে আছি। এ বিষয়ে আমাদের নীলফামারীর সেনাবহিনী টিমকে অবহিত করেছি। শুনছি, তারায় আমার পরিবারের লোককে মারধর করেছে। আমার মা ও বোন হাসপাতালে ভর্তি আছে। সহিদুল আমার বোনকে মারপিট করে বিবস্ত্র করে। তারা যদি জমি পায়, তাহলে আমরা তাদের জমি ছেড়ে দিব।
এ বিষয়ে গয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফ ফয়সাল মুন বলেন, আমি একটু অসুস্থ, বাইরে আছি। তবে অই জমিটা জাহিদুলেরা পাবে।
ডিমলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ কুমার রায় বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।