এক ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বাঘা বাঘা বোলার, বিশ্বসেরা ব্যাটার দের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের মাটিতেই দাপুটে জয় তুলে নেওয়া এখন আর স্বপ্ন নয় বাস্তব।
পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসে করা ৪৪৮/৬ডি. রানের পাহাড়ের সামনে এর বাংলাদেশী ব্যাটাররা ৫৬৫ রানের আরও বড় পাহাড় তুলে দেন। দুই দলের প্রথম ইনিংসেই ম্যাচের চারদিন শেষ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ পায় ১১৭ রানের লিড। সবার মনে তখন স্বাভাবিকভাবেই এই ম্যাচের ফলাফল হিসেবে ড্র ছাড়া আর কিছু আসার কথা নয়।
তবে পঞ্চম দিনের শুরুতে সবার ধারণা মিথ্যে করে দিয়ে সকালের সেশনে পাকিস্তানের পাঁচ উইকেট ফেলে দেন বাংলাদেশী বোলাররা। আগের দিনের একদম শেষের দিকে পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমে মাত্র পাঁচ রানেই ওপেনার সাইম আইয়ুবের উইকেট হারায়। এতে পঞ্চম দিনের প্রথম সেশন শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১০৮ রান। তখনো ৯ রানে পিছিয়ে আছে পাকিস্তান।
লাঞ্চের পর দ্রুত পাকিস্তানের আরও ২ উইকেট তুলে নিলে বাংলাদেশের সামনে বিশাল ব্যবধানে জয় হাতছানি দিতে থাকে। পাকিস্তানের লিড তখন কেবল মাত্র ১ রানের।
পথের কাঁটা হয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ান এক প্রান্তে দেয়াল হিসেবে দাঁড়িয়ে যান। বাংলাদেশী বোলারদের বল একের পর এক রুখে দিচ্ছিলেন আর সুযোগ পেলেই মারছিলেন বাউন্ডারি। আর ওভারের শেষ বলে রান নিয়ে স্ট্রাইকে থাকা নিশ্চিত করছিলেন। কারণ ক্রিজের আরেক প্রান্তে টেল এন্ডার ব্যাটার খুররম শাহজাদ। হাতে মাত্র দুই উইকেট। এভাবে খেলতে খেলতে নিজের অর্ধশতকও তুলে নেন রিজওয়ান। তবে এদিন তার ভাগ্যে বীরোচিত কিছু করার কথা লেখা ছিল না। ৫১ রানে মেহেদি হাসান্ মিরাজ এর বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে ফিরে যান এই পাকিস্তানি উইকেটকিপার। দুর্ভাগ্যবশত রিজওয়ানের এই একক প্রচেষ্টা বাংলাদেশের জয়ে কালক্ষেপন ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি।
রিজওয়ান ফিরে গেলে পাকিস্তান আর মাত্র ৪ রান করে ১৪৬ রানে গুটিয়ে গেলে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ৩০ রান।
বাংলাদেশী বোলারদের মধ্যে ৪ উইকেট নেন মেহেদি হাসান মিরাজ। গুরুত্বপূর্ণ ৩ উইকেট শিকার করেন সদ্যই হত্যা মামলার আসামী হওয়া সাকিব আল হাসান। শরিফুল, হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা সবাই ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
বাংলাদেশ সামনে বিশাল ব্যবধানে জয়ের হাতছানি নিয়ে নেমে ভক্তদের হতাশ না করে দুই ওপেনার ৩০ রান করে দলকে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানের জয় এনে দেন।
উল্লেখ্য এটা বাংলাদেশ দলের বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয় টেস্ট জয়।