থাই লটারী ও ভিসা প্রতারক চক্রের হোতা সাহাবুলকে পুলিশ গ্রেফতার করে পুরনো একটি মামলায় জেলহাজতে প্রেরণ করায় জনমনে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাই লটারী ও ভিসা প্রতারক সাহাবুলের বিরুদ্ধে নতুন মামলা দায়ের না হওয়ায় এ চক্রটির দৌরত্ম্য বৃদ্ধির আশংকাও করছে এলাকাবাসী। ফলে অন্য প্রতারকরা রয়েছে বহাল তবিয়তে।
সূত্র জানায়-থাই লটারী ও ভিসা প্রতারক সাহাবুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে থাই লটারীতে বিজয়ী করে দেয়া ও জাল ভিসা করে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে লোক পাঠিয়ে দিয়ে উচ্চ বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন বাংলাদেশী প্রবাসীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ধনকুবের বনে যান। এছাড়া সে অত্র এলাকার থাই গেম ও ভিসা চক্রের মূল হোতা। তাঁর অধীনে শতাধিক প্রতারক চক্র সক্রিয় রয়েছে। সে থাই ও ভিসা চক্রের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশী প্রবাসীদের কখনও লটারী পেয়ে দেয়া আবার কখনও ভুয়া ভিসা প্রদর্শন পূর্বক প্রবাসীদের নিঃস্ব করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। কিশোরগঞ্জসহ আশপাশ এলাকায় অর্থের দৌরত্ম্যে বিভিন্ন অপরাধসহ ক্ষমতার আধিপত্য বিস্তার করে স্থানীয় শান্তিকামি সাধারণ জনগনের মাঝে রাম রাজত্ব কায়েম করছিল। এছাড়া সে সাংবাদিক, ওসি, পুলিশ সুপার, পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্নজনের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতারণা করেছে বলে জানা গেছে। সে অনেককে জিম্মি করেও অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে গেছে।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়- প্রতারক সাহাবুলের চক্রটি পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছে। এ চক্রটি ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়েও ইতোমধ্যে মানুষজনকে জিম্মি করে প্রতারণা করেছে।
পুলিশ সূত্র জানায়- এ চক্রটি সৈয়দপুর, জলঢাকা, পার্বতীপুর, তারাগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জের ক’জনকে সাথে নিয়ে ভুয়া ডিবি পুলিশ চক্র গঠন করে বলে জানা যায়। এ চক্রটি থাই লটারী ও ভিসা প্রতারণা করে বিভিন্ন প্রবাসীর কাছে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে এবং নিচ্ছে। তাদের এ চক্রটির দৌরত্ম্যে অনেকে কোনঠাসা। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না।
নিতাই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শাফিউল ইসলাম জানান- তাদের দৌরত্ম্যে জনগণ অতিষ্ঠ। আমি প্রথমে তাদের বিরুদ্ধে বলেছি। এদের রোঁধ করা না হলে অনেক মানুষ প্রতারিত হয়ে নিঃস্ব হবে ও হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনুগ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
নাগরিক কমিটির কিশোরগঞ্জ উপজেলা সংগঠক আব্দুল কাইয়ুম বলেন- সাহাবুল একজন থাই গেম ও ভিসা প্রতারণার সম্রাট। তার মোবাইল ও কম্পিউটারে থাই গেম ও ভিসা প্রতারণার তথ্য পাওয়ার পরেও তার বিরুদ্ধে কোন সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা না হওয়ায় আমরা সাধারণ মানুষ অসন্তোষ। কারণ তাকে পুরনো যে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে তার ফাকফোকর দিয়ে সে কয়েক দিনের মধ্যে জামিনে মুক্ত হতে পারেন। ফলে ওই চক্রটির চৌরাত্ম্য আরও বাড়বে। এছাড়া এ এলাকায় অন্য যারা থাই গেম ও ভিসা প্রতারণার সাথে জড়িত তাদের দৌরত্ম্যে অনেকে নিঃস্ব হবে। অনেকে আবার থাই গেম ও ভিসা প্রতারণার সাথে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আমার আশংকা।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন- পুরাতন মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলে পাঠানোয় অল্প ক’দিনের মধ্যে সে জেল থেকে বের হয়ে আরও বে-পড়য়া হতে পারে। সে তাঁতী লীগের নেতা, থাই গেম ও ভিসা প্রতারক প্রমাণিত। সে সহ সকল থাই গেম ও ভিসা প্রতারকদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোড় দাবী করছি।
কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশরাফুল ইসলাম জানান- তাকে ২৪ সালের একটি সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলায় গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আইনি জটিলতায় থানায় নতুনভাবে মামলা নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে থাই গেম ও ভিসা প্রতারকদের আইনের আওতায় নেয়া হবে।
প্রতিবেদনঃ লাতিফুল আজম,
কিশোরগঞ্জ,নীলফামারী।